নিউজ ডেস্ক : শেখ হাসিনার জীবন রক্ষা করায় নয়াদিল্লীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপির সাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’ বিশৃঙ্খল জনতার শাসনকে সুযোগ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে ‘সজীব ওয়াজেদ জয়’ বলেন, ‘দ্রুত নির্বাচন না দিলে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন তিনি।’
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ জয় এই কথা বলেন। রোববার সেই সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘সম্পূর্ণ ক্ষমতাহীন’ উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খল জনতার শাসন (মব রুল) চলছে। বিশৃঙ্খল জনতা যদি কাল বলে, না, আমরা অমুক ব্যক্তিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে চাই না, তাহলে তাদের পরিবর্তন করতেই হবে।
সজীব ওয়াজেদ জয় এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে প্রধান বিচারপতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, পুলিশ প্রধানসহ সরকার ও রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
নির্বাচন বিলম্বিত করলে ঝুঁকি তৈরি হবে বলে সতর্ক করেছেন সজীব ওয়াজেদ। নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন দেওয়াটা তাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের) জন্য সবচেয়ে বেশি মঙ্গলজনক...জনগণের কাছে বৈধতা আছে, এমন একটি বৈধ সরকার ও সত্যিকারের কর্তৃপক্ষের হাতে (ক্ষমতা) ফেরাটা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য মঙ্গলজনক)।
তিনি বলেন, এটা (দ্রুত নির্বাচন) না হলে সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে জয় বলেন, আমাদের লাখ লাখ সমর্থক রয়েছেন। তারা (দেশ ছেড়ে) কোথাও যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না। এটা কখনোই দেশের অন্তত অর্ধেক মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
তিনি আরও বলেন, এটা (নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা) হবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে। আমাদের একসঙ্গে কাজ করা দরকার।
এছাড়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন ও সংঘাত-সংঘর্ষ উসকে দেওয়ার পেছনে বিদেশি শক্তি কাজ করেছে বলেও দাবী করেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তবে এমন দাবির সপক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। বিদেশি শক্তির হাত প্রসঙ্গে সজীব ওয়াজেদ বলেন, কেবল কোনো গোয়েন্দা সংস্থাই অস্ত্র চোরাচালান করে এনে তা বিক্ষোভকারীদের সরবরাহ করতে পারে।
এসময় শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ভারত সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, তার (শেখ হাসিনার) জীবন রক্ষা করায় ও তাকে নিরাপত্তা দেওয়ায় আমি (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এদিকে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতার চেতনা ও নিজের পরিবারের জন্য দেশের মানুষের কাছে দোয়া চেয়েছেন সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
রোববার (১১ আগস্ট) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় তিনি দোয়া চেয়ে ১৫ আগস্টে শান্তিপূর্ণভাবে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে ফুল দিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
উক্ত ভিডিও বার্তায় সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আপনারা জানেন, আপনারা দেখেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর বাসা পুড়িয়ে ফেলেছে। যে বাসায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। আমার পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়। যে বাসায় ৭৫ খুনিরাও ধ্বংস করার সাহস পায়নি। যে বাসা এতদিন উনার (বঙ্গবন্ধুর) মিউজিয়াম ছিল, সেই বাসাকে তারা পুড়িয়ে ফেলেছে।’
জয় আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি দলীয় বিষয় না। বঙ্গবন্ধু হলেন জাতির পিতা৷ বঙ্গবন্ধু না হলে আজ আমরা বাংলাদেশ পেতাম না। আজকে পাকিস্তান হয়ে থাকতাম। সামনে ১৫ আগস্ট। সেই কালরাত, যে রাতে বঙ্গবন্ধু ও আমার পরিবারকে হত্যা করা হয়। আপনারা যদি স্বাধীনতার চেতনা বিশ্বাস করেন, আপনারা যদি বাংলাদেশকে ভালোবাসেন। এই যে বাংলাদেশে বাস করছেন এবং যদি মেনে নেন যে বঙ্গবন্ধু আপনাকে স্বাধীনতা দিয়েছে, আমাদেরকে স্বাধীনতা দিয়েছে। ১৫ আগস্ট আপনাদের প্রতি আহ্বান, শান্তিপূর্ণভাবে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে ফুল দিয়ে আসবেন। দোয়া করবেন, বঙ্গবন্ধুর জন্য, স্বাধীনতার চেতার জন্য, আমার পরিবারের জন্য।
এসএনআর/ডেস্ক রিপোর্ট/তিতাস টাইমস২৪
0 মন্তব্যসমূহ